Sunday, March 31, 2024

চুলের যত্নেও কি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট প্রয়োজন?

“চুলের যত্নে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট” – শুনে নিশ্চয়ই একটু অবাক লাগছে, তাই না? কারণ সাধারণত ‘অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট’ এই টার্মটি ব্যবহার হয় ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে। তবে ত্বকের পাশাপাশি চুলের যত্নেও রয়েছে কিছু অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট যা আপনার চুলকে আরো সুন্দর ও শাইনি করে তুলতে সাহায্য করবে। আসুন আজকের ফিচারে জেনে নেওয়া যাক চুলের যত্নে কার্যকরী কিছু অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট সম্পর্কে।

অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট কী?

অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট বলতে সেই সকল ইনগ্রেডিয়েন্টগুলোকে বোঝানো হয় যেগুলো বায়োলজিক্যালি অ্যাকটিভ হয়ে থাকে। এগুলো একেকটি পারসেন্টেজে ক্লেনজার, ক্রিম, সিরাম ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। নিজের কনসার্ন বুঝে সঠিক পারসেন্টেজে এ ধরনের ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো ব্যবহার করা হলে খুব দ্রুতই ভিজিবল রেজাল্ট পাওয়া যায়। কয়েকটি জনপ্রিয় অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের নাম হলো রেটিনল, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড ইত্যাদি।

চুলের জন্য কোন অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করবেন?

চুলের যত্নে কার্যকরী অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট কোনগুলো?

চুলের যত্নে ব্যবহৃত অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো মুলত স্ক্যাল্পেই বেশি ব্যবহার করতে হয়। পাশাপাশি কিছু ইনগ্রেডিয়েন্ট চুলে অ্যাপ্লাই করার জন্যও বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ করে থাকেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চুলের যত্নে আপনারা কোন অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো ব্যবহার করতে পারেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

ল্যাকটিক অ্যাসিড

আমাদের স্ক্যাল্প ভালো রাখতে সবসময়ই স্ক্যাল্পকে এক্সফোলিয়েট করা প্রয়োজন। সঠিকভাবে এক্সফোলিয়েট না করলে স্ক্যাল্পে ডেড স্কিন সেলস জমে গিয়ে  খুশকি, চুলকানি, র‍্যাশ ইত্যাদি দেখা যায়। এর ফলে চুলের গোড়া যেমন পরিষ্কার থাকে না, তেমনি হেয়ার গ্রোথও কিন্তু বাধাগ্রস্থ হয়। তাই সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন স্ক্যাল্প এক্সফোলিয়েট করতে হবে, আর এই এক্সফোলিয়েশন করতে সাহায্য করে কিছু প্ল্যান্ট বেইজড অ্যাসিড। এই অ্যাসিডগুলোর মধ্যে প্রথমেই যে নামটি আসে তা হলো ল্যাকটিক অ্যাসিড। ল্যাকটিক অ্যাসিড মূলত আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের একটি ফর্ম, যা সুগারকেন বা আখ থেকে সংগ্রহ করা হয়। এটি একটি কার্যকরী এক্সফোলিয়েটর যা স্ক্যাল্প ডিপলি ক্লিন করতে সাহায্য করে। ল্যাকটিক অ্যাসিড স্ক্যাল্পে দ্রুত নতুন সেল গঠন করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, স্ক্যাল্পের কোলাজেন প্রোডাকশন করে চুল হেলদি করে তুলতেও এটি সাহায্য করে থাকে।

স্যালিসাইলিক অ্যাসিড

স্যালিসাইলিক অ্যাসিড আরেকটি অ্যামেজিং এক্সফোলিয়েটর। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের একটি ফর্ম। এটি একটি অয়েল স্যলুবল অ্যাসিড যা খুব সহজেই স্ক্যাল্পের ডেড সেলসগুলো রিমুভ করতে পারে এবং হেয়ার ফলিকলে পেনিট্রেট করতে পারে। এটি স্ক্যাল্প একনে, ইরিটেশন, ব্যাকটেরিয়া, স্ক্যাল্প সোরিয়াসিস, খুশকি ইত্যাদি দূর করতে সক্ষম।

চুলের যত্নে রেটিনল কেন ব্যবহার করবেন?

রেটিনল( ভিটামিন এ)

রেটিনল ত্বকের যত্নে খুবই পরিচিত একটি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট। অ্যান্টি এজিং ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসাবে পরিচিত হলেও স্ক্যাল্প ও চুলের জন্যেও এটি বেশ কার্যকর। এটি স্ক্যাল্পে নতুন সেল তৈরি করতে সাহায্য করে। রেটিনল স্ক্যাল্প এক্সফোলিয়েশন করে বলে অন্যান্য অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট স্ক্যাল্পে সহজে পেনিট্রেট করতে পারে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করেছেন যে রেটিনল চুলের ডেনসিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

পেপটাইড

পেপটাইড চুলের জন্য খুবই কার্যকরী একটি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট। এটি মূলত অ্যামাইনো অ্যাসিডের একটি ধরন যা চুলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। পেপটাইডের মলিকুলার সাইজ খুব ছোট, যার কারণে এটি চুল ও স্ক্যাল্পে সহজেই পেনিট্রেট করতে পারে। পেপটাইড চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি চুলের ভেংগে পড়া রোধ করে, চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, চুলের গ্রোথ বৃদ্ধি করে এবং চুলের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে। তাই হেয়ার কেয়ারে পেপটাইড সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট রাখার চেষ্টা করুন।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি, যেগুলো চুলের জন্য খুবই কার্যকরী। এটি এমন একটি ইনগ্রেডিয়েন্ট যা ফ্রি রেডিক্যাল ড্যামেজ ও পরিবেশ দূষণ থেকে সুরক্ষা দেয় ত্বক ও চুল উভয়কেই। এছাড়াও এটি ইউভি ড্যামেজ থেকেও চুলকে রক্ষা করে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট স্ক্যাল্পের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, যার ফলে চুল ও স্ক্যাল্পের এজিং প্রসেস স্লো ডাউন হয়ে যায়। এছাড়াও অ্যালোপেশিয়ার মতো সমস্যার সমাধান দিতেও এটি সাহায্য করে। তাই চুল ও স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট হেয়ার কেয়ার রুটিনে যুক্ত করতে হবে।

টি ট্রি অয়েল কিন্তু চুলের জন্যেও বেশ ভালো

টি ট্রি অয়েল

টি ট্রি অয়েল স্ক্যাল্পের ইনফেকশন, ইচিং, র‍্যাশ ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে এবং স্ক্যাল্পে সুদিং ইফেক্ট দেয়। এই অয়েল স্ক্যাল্পকে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা দেয়, স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে এবং চুলের স্ট্র‍্যান্ডেও একটা ফ্রেশনেস বজায় রাখে। যাদের স্ক্যাল্প সেনসিটিভ কিংবা স্ক্যাল্পে একনে, র‍্যাশ, খুশকি ইত্যাদির সমস্যা রয়েছে, তারা টি ট্রি অয়েল যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে উপকৃত হবেন।

এটুকুই ছিলো চুলের যত্নে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট নিয়ে আজকের আলোচনা। আশা করছি আপনারা বুঝতে পারছেন, ত্বকের পাশাপাশি চুলের যত্নেও যদি প্রয়োজন বুঝে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট অ্যাড করা যায়, তাহলে খুব সহজেই চুলকে আরো হেলদি করে তোলা যায়। যেকোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অথেনটিক প্রোডাক্ট চুজ করার। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।

ছবিঃ সাজগোজ

The post চুলের যত্নেও কি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট প্রয়োজন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/NfMrdkP
Previous Post
Next Post

0 comments: