বাইরের তাপমাত্রা ৩০+ ডিগ্রী। সামনে এই তাপমাত্রা বেড়ে যাবে ৩৫-৩৭ এ। গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে অতিষ্ট সবাই। বড়রা তো মেনে নিতে পারে, বাচ্চাদের জন্য মানিয়ে নেওয়া, বোঝা খুবই কষ্টের। এর মাঝে গরমের রোগ ব্যাধি তো আছেই। গরমের তীব্রতায় বাচ্চাদের খাবারের প্রতিও কোন আগ্রহ থাকে না। গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে বাচ্চাদের খাবার রুটিনের গরমিল যেন নিত্য দিনের ব্যাপার।
গরমে বাচ্চারা কী খাবে, খাবারের ধরন কেমন হওয়া উচিত, কীভাবে তাদের ভালো রাখা যাবে এই নিয়ে বাবা মায়ের উৎকন্ঠার শেষ নেই। তাদের কিছুটা স্বস্তির জন্যই আমার আজকের লেখা।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে শিশুর খাবার যেমন হতে হবে
৬ মাসের কম বয়সী বাচ্চাদের শুধুমাত্র ব্রেস্ট মিল্ক দিবেন যতোটা সম্ভব। আর্টিফিশিয়াল বা কৌটার দুধ এড়িয়ে চলবেন একেবারে ইমার্জেন্সি না হলে। গরমে বাচ্চাদের ডায়রিয়া, বদহজম, বিভিন্ন চর্মরোগ, সর্দি কাশি, নিউমোনিয়া হতে বেশি দেখা যায়। কাজেই শিশুদের খাবার এমন হতে হবে যেন তা থেকে রোগ সংক্রমণ না হয়।
এছাড়াও গরমে শিশুর খাবার তৈরির সময় আরও যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে সেগুলো হলঃ
১) বাচ্চাদের খাবার হতে হবে সহজপাচ্য। সে হিসেবে নরম করে রান্না ভাত বা জাউ ভাত হতে পারে তাদের কমন খাবার। কম তেল মসলায় /পাঁচফোড়নে রান্না করা সবজি, আর পেঁপে লাউ, ঝিঙ্গা, শশা ইত্যাদি পানি জাতীয় সবজি দিয়ে পাতলা করে মাছের ঝোল দেওয়া যেতে পারে।
২) বাসি খাবার, বাইরের খাবার, ভাজা পোড়া এগুলো পুরোদমে এড়িয়ে যেতে হবে। হালকা পুষ্টিকর খাবার যেমন সবজি দিয়ে নরম পাতলা খিচুড়ি (কম তেল মসলায়), সবজির স্যুপ, মাছ বা মাংসের পাতলা ঝোল দিতে পারেন। এছাড়া ফ্রিজের পানি সরাসরি পান করা থেকে বিরত রাখতে হবে।
৩) ফল বা ফলের জুস ইত্যাদি যতোটা দিতে পারেন ভালো। ডাবের পানি, লেবুর শরবত, তরমুজ, পেঁপে, জাম, জামরুল ইত্যাদি দেশীয় ফল শিশুকে খেতে দিন। একটু বড় বাচ্চা হলে খাবারের সাথে শশা, গাজর, লেবু দিতে পারেন। মাঝে মাঝে খাবারে রাখতে পারেন দই-চিড়া কলা।
৪) পানি পানের ক্ষেত্রে ফিল্টার পানি পান করাতে হবে। বাইরের খোলা শরবত যেন শিশু না খায়।
৫) প্যাকেট জাত খাবার, চিপস, কেক, চকলেট, আচার, বিস্কুট, দেওয়ায় সতর্ক থাকুন।
প্রচন্ড গরমে শিশুর বিশেষ যত্ন
১) যে ঘরে তাপমাত্রা একটু কম থাকে সে ঘরে বাচ্চাদের রাখতে হবে। এসি থাকলে Temperature ঠিক রাখবেন, যেন বেশি ঠান্ডা না হয় ঘর।
২) বাচ্চাদের নিয়মিত এক বা দুইবার গোসল করালে ভালো অনুভব করে। যেসব বাচ্চারা বেশি ঘামে, তাদের গা মাথা সুতি নরম কাপড় দিয়ে মুছে দিন।
৩) শিশুর প্রস্রাব ঠিকমতো হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন, না হয় ইউরিন ইনফেকশন হতে পারে। বাচ্চারা যেন খেলা বা পড়ার ফাঁকে পানি পান করে সেটি লক্ষ্য রাখুন।
৪) বাচ্চাকে সুতি কাপড় পড়ানো সবচেয়ে ভালো, এতে করে ঘামাচি, চর্ম রোগ,র্যাশ কম হবে শরীরে।
৫) বাইরে বা স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে শিশুর জন্য উপযোগী সানস্ক্রিন লাগাতে পারেন। ছাতা, রুমাল, পানির বোতল দিতে ভুলবেন না।
এই টিপস গুলো মেনে চললে আশা করি গরমেও শিশুরা থাকবে সুস্থ। আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন।
ছবি- সাটারস্টক
The post গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে শিশুর যত্ন ও খাদ্যতালিকা কেমন হওয়া উচিত ? appeared first on Shajgoj.
from Shajgoj https://ift.tt/Cpm6gQt
0 comments: