Wednesday, June 7, 2023

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স কীভাবে ঠিক রাখা যায়?

স্কিন কেয়ারের কথা বলতে গেলে অনেক কিছুর কথাই বলা যায়। যেমন- ক্লেনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজাইং, সিরাম অ্যাপ্লাই ইত্যাদি। ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্কিনের জন্য নানা কিছু করছেন। কিন্তু সবকিছু করার মূলে আসলে কাজ করে স্কিনের অয়েল ও ওয়াটার। এই দুটোর ব্যালেন্স যদি ঠিক না থাকে তাহলে যত কিছুই করা হোক না কেন লাভ হবে না। বুঝতেই পারছেন আজ আমি কথা বলতে যাচ্ছি স্কিনের অয়েল ও ওয়াটার নিয়ে। ভাবছেন আমি মুখে তেল পানি লাগাতে বলছি? একদম না। বরং এই দুটি উপাদান যদি স্কিনে ইমব্যালেন্সড থাকে তাহলে হতে পারে বেশ কিছু সমস্যা। আজ জানাবো স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক না থাকলে কী কী সমস্যা হতে পারে এবং কীভাবে এই দু’টোর ব্যালেন্স করবেন সে সম্পর্কে।

ত্বকের ধরন বোঝা কেন জরুরি?

প্রথমে বুঝতে হবে আপনার স্কিন কী ধরনের। অনেকের মনে একটা ভুল ধারণা আছে যে অয়েলি স্কিনে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হয় না। এটা একদম ভুল। কারণ অয়েলি স্কিনে তেল না লাগালে সেটা আরও বেশি সেবাম তৈরি করে স্কিনকে আরও বেশি অয়েলি করে তুলবে। আবার অনেকে ড্রাই স্কিন মনে করে ভুল ময়েশ্চারাইজার মাখেন, এটাতেও স্কিনের ড্যামাজ হয়।

ত্বকে ন্যাচারালি তেল তৈরি হয়। আর পানির পরিমাণ নির্ধারিত হয় আপনি কেমন পানি পান করছেন এবং আরও কিছু পারিপার্শ্বিক জিনিসের উপর। ত্বকে তেল তৈরি হয় মূলত স্কিনকে বাইরের ড্যামেজ থেকে রক্ষা করার জন্য। অনেক সময় এই কারণে অনেক ড্রাই স্কিন এর মানুষ মনে করেন তাদের স্কিন অয়েলি এবং সেই কারণে ঘন ঘন ক্লেনজার ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করেন, ফলে ত্বকের ন্যাচারাল অয়েল লেভেল নষ্ট হয়ে যায় এবং স্কিন খসখসে দেখায়।

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স করা কেন জরুরি

স্কিনে এক্সেস অয়েল কেন তৈরি হয়?

আমাদের স্কিনে এক্সেস অয়েল প্রোডিউস হওয়ার পেছনে কিছু কারণ আছে। সেগুলো হচ্ছে-

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

বেশিরভাগ মানুষের স্কিন প্রবলেমের পিছনে অন্যতম কারণ থাকে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। যদি তেলে ভাজা, অতিরিক্ত মশলাদার খাবার বেশি খাওয়া হয় সেক্ষেত্রে স্কিনের প্রবলেম সারানো খুব মুশকিল হয়ে যায়।

লাইফস্টাইল

অতিরিক্ত ব্যায়াম এবং ঘুমের অনিয়মের কারণেও অতিরিক্ত সেবামের নিঃসরণ ঘটে। তাই ত্বকে সেবাম এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে পরিমিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দরকার।

স্ট্রেস

স্ট্রেসের কারণে শরীরে হোয়াইট ব্লাড সেল কাউন্ট কমে যায় বলে সেটা স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। স্কিনের সারফেস অনেক সেনসিটিভ হয়ে যায় এবং সহজেই ইরিটেশন হয়। আর ইরিটেশন স্কিনের তেলের নিঃসরণ বাড়ায়।

স্ট্রেসের কারণেও ফেইসে একনে দেখা দিতে পারে

ভিটামিন বি এর অভাব

শরীরে ভিটামিন বি এর অভাব হলে স্কিন রাফ হয়ে যায়। তাই সেটি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। প্রয়োজন মনে হলে ভিটামিন বি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। অথবা ভিটামিন বি আছে এমন কোনো সিরাম ব্যবহার করলে অতিরিক্ত সেবাম নিঃসরণ কমে যায়।

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক আছে তো?

ফেইসে একনে দেখা দিলেই আমরা অভিযোগ করে বসি, প্রোডাক্টে নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা ছিল! অথচ একবারও ভাবি না যে এই সমস্যা হতে পারে স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক না থাকলেও। এই ব্যালেন্স যদি ঠিক না থাকে তাহলে কী কী সমস্যা হতে পারে চলুন এ বিষয়ে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক-

১) মুখের ত্বকে তেল পানির ইমব্যালেন্স হলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে এবং একনে তৈরি করে। সেজন্য ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি। কিন্তু সচরাচর আমরা যেসব ফেইসওয়াশ ব্যবহার করি, সেগুলো শুধু তেলটাকে পরিষ্কার করে কিন্তু ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে পারে না বলে বার বার ধোয়ার পরেও মুখে একনে প্রবলেম দেখা দেয়।

২) আমরা যখন গরমে ঘামি তখন ঘামের মধ্যে থাকা সোডিয়াম ত্বকে ছড়িয়ে পড়ে। এরকম অবস্থায় ব্যাকটেরিয়া দ্রুত জন্মায় এবং সারা মুখে একনে ছড়িয়ে পড়ে।

৩) আরেকটি কমন জিনিস হল পোরস ব্লক হয়ে যাওয়া। মুখের অতিরিক্ত সেবাম পোরসকে ব্লক করে দেয়। দ্রুত পরিষ্কার না হলে এই ব্লক শক্ত হয়ে যায় এবং মুখে পার্মানেন্ট দাগ হয়ে যায়।

স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স ঠিক না থাকলে পোরস ব্লক হয়ে যেতে পারে

এই ব্যালেন্স ঠিক রাখা যায় যেভাবে  

অয়েলি স্কিনে অয়েলের পরিমাণ বেশি হয় এটা তো আমরা জানি। আবার এটাও সত্যি যে, যদি ওয়াটারের সাথে অয়েলের ব্যালেন্স ঠিক না থাকে, বা কমবেশি হয় তাহলে স্কিন প্রবলেম দেখা দিতে পারে। চলুন জেনে নেই কীভাবে এই ব্যালেন্স ঠিক রাখা যায়-

১) সঠিক ক্লেনজার ব্যবহার করা

ফেইসের স্কিনের তেল পরিষ্কার করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মুখ ধুয়ে ফেলা। কিন্তু এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে সঠিক ক্লেনজার ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, ক্লেনজারের উপকরণ কী কী, দিনে কয়বার ধুচ্ছেন ইত্যাদি। কেননা ক্লেনজার বেশি ব্যবহার করলে বা ক্লেনজারের উপাদান রুক্ষ হলে ত্বকে আরও বেশি সেবাম নিঃসরণ হয় এবং স্কিনের পোরস ব্লক হয়ে একনের সৃষ্টি করে।

২) পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখা

স্কিন কতটা সেবাম নিঃসরণ করবে তার অনেকটা নির্ভর করে পরিবেশের উপর। আপনি যদি অনেক বেশি সময় এসি রুমে থাকেন বা অনেক বেশি সময় রোদে থাকেন সেক্ষেত্রেও আপনার স্কিন অনেক বেশি অয়েলি হয়ে যেতে পারে।

৩) ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা

একটা ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার আপনার স্কিনের জন্য হয়ে উঠতে পারে গেইম চেঞ্জার। তাই ময়েশ্চারাইজার কেনার আগে এতে থাকা উপাদান সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা

৪) শরীরের তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখা

এখন যেহেতু বাইরে অনেক গরম তাই শরীরের তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখা এখন অনেক বেশি জরুরি। কেননা গরমে সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে অতিরিক্ত সেবাম নিঃসরিত হয়। এর জন্য নরম সুতি কাপড় পরতে পারেন, শরীর ঠান্ডা রাখে এমন খাবার খান, পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

৫) সঠিক ডায়েট মেনে চলা

ভিটামিন এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার আছে এমন ডায়েট মেনে চলুন। তেলযুক্ত মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। হাই গ্লাইসেমিক ডায়েট অর্থাৎ যে ডায়েটে সুগারি ও রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার বেশি থাকে, সেটি ফলো করলে স্কিনে এক্সেস সেবাম প্রোডাকশন হতে পারে।

 

এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স রাখা কেন জরুরি এবং কীভাবে ব্যালেন্সড রাখবেন। সেই সাথে স্কিন কেয়ার রুটিনে যে প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করবেন সেগুলো যেন অথেনটিক হয় খেয়াল রাখতে হবে সেদিকেও। অথেনটিক স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

ছবিঃ সাজগোজ

The post স্কিনে অয়েল ও ওয়াটারের ব্যালেন্স কীভাবে ঠিক রাখা যায়? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/UHGb46Z
Previous Post
Next Post

0 comments: