Wednesday, June 21, 2023

মখর টউমর থক নজক সরকষত রখবন কভব?

টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকেই সাধারণত টিউমার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। আর সেটা যদি হয় মুখে বা মুখগহ্বরের যেকোনো জায়গায়, তখন তাকে মুখের টিউমার বলা হয়। মুখের কোন কোন জায়গায় টিউমার হতে পারে, প্রকারভেদ, কেন হয়, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সম্পর্কে আজ বিস্তারিত জানাবো।

কোন কোন জায়গায় মুখের টিউমার হতে পারে?

৯০ শতাংশ মুখের টিউমারই স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা। ওরাল স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা হলো স্কোয়ামাস সেল নামক এপিথেলিয়াল কোষের ক্যান্সার। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঠোঁট ও মুখগহ্বরে স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সার হয়ে থাকে। ক্যান্সার বিস্তৃতি লাভ করলে ক্যান্সার সেল বা কোষ আরও গভীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কোষের ডিএনএ’র মধ্যে যখন ঠোঁটের অথবা মুখের কোষের পরিবর্তন বা মিউটেশন হয়ে থাকে, তখন মুখের ক্যান্সার হয়। স্বাস্থ্যবান কোষগুলো মারা গেলে এ মিউটেশন ক্যান্সার বিভাজিত হতে সাহায্য করে। ক্যান্সারের সেলগুলো জমা হয়ে একটি টিউমার গঠন করতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্সার সেল মুখের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যার কারণে ওরাল টিউমার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। মৌখিক গহ্বরে টিউমারের জন্য সবচেয়ে সাধারণ জায়গাগুলো হলো-

  • জিহ্বা
  • টনসিল
  • অরোফ্যারিনক্স (গলার মধ্যভাগ ও মুখের পিছনের অংশ)
  • মাড়ি
  • মুখের লালাগ্রন্থি
  • মুখের রক্তনালী
  • গালের চর্বি

সহজভাবে বললে, মুখের বিভিন্ন জায়গায় টিউমার হতে পারে। তাই টিউমারের কোনো লক্ষণ দেখলে আগে থেকেই সচেতন হতে হবে।

মুখের টিউমার

যে লক্ষণগুলো টিউমারকে নির্দেশ করে

মুখের টিউমার হলে সাধারণত কিছু লক্ষণ দেখা দিবে। যেমন-

  • প্রথমেই একটা পিন্ড বা লাম্পের মাধ্যমে টিউমার প্রকাশিত হয়
  • মাড়ির থেকে দাঁত আলগা হয়ে যেতে পারে
  • ঠোঁট ফোলা থাকবে বা ঘা থাকবে, যা সারবে না
  • খাবার গিলতে অনেক কষ্ট হবে
  • কন্ঠস্বর পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে
  • মুখে অসাড়তা কাজ করবে
  • মুখ, জিহ্বা বা মাড়িতে সাদা বা লাল দাগ হয়ে যেতে পারে
  • ওজন হ্রাস পেতে পারে

কত ধরনের হয়?

ওরাল টিউমার সাধারণত দুই ধরনের হতে পারে। সেগুলো হচ্ছে-

১) বিনাইন টিউমার – বিনাইন টিউমার বলতে সাধারণত একটি অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বোঝায়, যা পার্শ্ববর্তী টিস্যুকে আক্রমণ করে না। এটি মুখের জন্য কম ক্ষতিকর। এই টিউমারের ইতিহাস বেশ পুরনো থাকে। রোগীর চোয়াল হয়তো এক্ষেত্রে ৫-১০ বছর পর্যন্ত ফুলে থাকতে পারে। ধীরে ধীরে এই ফোলাভাব বাড়তে থাকে। যখন এটি মুখের গুরুত্বপূর্ণ কোনো গঠনের উপর চাপ দেয়, তখন ব্যথা শুরু হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে টিউমার এত বড় হয়ে যায় যে, চোখ ছোট হয়ে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়। তখন এটি ঝুঁকির হয়ে দাঁড়ায়।

২) ম্যালিগন্যান্ট টিউমার – এই টিউমার রোগীর জন্য ভয়ের। কারণ এটির ইতিহাস বেশিদিনের থাকে না। কখনো কখনো রোগী বোঝার আগেই অবস্থা খারাপের দিকে চলে যেতে পারে। এই টিউমারগুলো মুখে বা মুখের আশেপাশের গঠনে হতে পারে। এটা মুখের জন্য ক্ষতিকর। এটিকে ম্যালিগনেন্সিও বলে। এই টিউমার হলে বুঝতে হবে রোগী মুখের ক্যান্সারে ভুগছেন।

মুখের টিউমার এর ধরন

টিউমার হওয়ার কারণ

বিভিন্ন কারণে সাধারণত ওরাল টিউমার হয়ে থাকে। এই টিউমারের ক্ষেত্রে কিছু ভাইরাস মুখ্য ভূমিকা পালন করে। যদিও বেশিরভাগ টিউমারের কারণ মূলত অজানাই থাকে। যে কারণগুলো চিহ্নিত করা গেছে সেগুলোর মধ্যে আছে-

১) হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)

২) এপস্টাইন-বার ভাইরাস (EBV)

৩) পরিবারে আগেও কারো মুখগহ্বরের টিউমার থাকলে সেক্ষেত্রে সেই পরিবারের সদস্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্যান্যদের চাইতে বেশি থাকে।

৪) মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো মেনে না চলা এবং মাড়ির বিভিন্ন রোগ।

৫) অধিক পরিমাণে পান, সুপারি বা সিগারেট খেলেও মুখের টিউমারের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।

চিকিৎসা

লক্ষ্মণ প্রকাশের সাথে সাথেই মুখের টিউমারের চিকিৎসা নেয়া জরুরি। এক্ষেত্রে আক্রান্ত যেকোনো ব্যক্তিই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যান। যেভাবে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়-

১) এই টিউমার যদি মুখের বাইরে বা মুখের পিছনে বা গলার অংশে (অরোফ্যারিনক্স) ছড়িয়ে না পড়ে, তবে শুধুমাত্র অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব হতে পারে।

২) যদি মুখগহ্বরের টিউমারটি বড় হয় বা ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।

মুখের টিউমার এর চিকিৎসা

প্রতিরোধ করার উপায় কী? 

মুখগহব্বরের যত্নের মাধ্যমেই এই টিউমারকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেভাবে এই রোগের প্রতিরোধ করা যায়-

১) তামাক পরিহার করতে হবে। কারণ একজন মানুষ যত বেশি সময় ধরে এবং যতবার তামাক ব্যবহার করবেন, মুখগহব্বরের টিউমারের ঝুঁকি ততই বেশি হবে।

২) পরিমিত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় অ্যালকোহল পরিহার করলে।

৩) নিয়মিত ৬ মাস পর পর ডেন্টিস্ট এর কাছে গিয়ে মুখের অবস্থা পরীক্ষা করা উচিত।

৪) Human papillomavirus (HPV) এর জন্য টিকা নিতে হবে।

৫) ঠোঁটকে সূর্যের ক্ষতিকর আলোকরশ্মি থেকে রক্ষা করতে হবে।

মুখের টিউমার হলে প্রথমদিকে অনেকেই হয়তো বুঝতে পারেন না। ততদিনে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। তাই মুখে কোনো ধরনের অস্বস্তি হলে বা নিজের কাছে দ্বিধা লাগলে অবশ্যই ডেন্টিস্টের কাছে যান। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

ছবিঃ সাটারস্টক, Technology Networks

The post মুখের টিউমার থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন কীভাবে? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/HBpcTfL
Previous Post
Next Post

0 comments: