Monday, June 12, 2023

অ্যাডাল্ট একনে থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনো উপায় আছে কি?

৩৭ বছর বয়সী প্রমা গত কয়েকদিন ধরে একনে প্রবলেম ফেইস করছে। বিষয়টি নিয়ে সে বেশ চিন্তিত। কারণ এই প্রবলেম তার টিনেজে হয়েছিল। নতুন করে এই বয়সেও যে ব্রণের সমস্যা এতটা বেড়ে যাবে সে ভাবেনি। প্রমার ফেইসে যে একনে দেখা দিয়েছে একে বলা হয় অ্যাডাল্ট একনে বা প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণ। কেন এই ব্রণ হয় এবং কীভাবে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তাই জানাবো আজকের আর্টিকেলে।

অ্যাডাল্ট একনে কী?

ব্রণ বা একনে ত্বকের এমন একটি সমস্যা, যা টিনেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে দেখা যায়। সাধারণত আমরা জানি যে, ব্রণ/একনে ত্বকের প্রদাহজনিত সমস্যা, যা প্রোপিওনিব্যাকটেরিয়াম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়ে থাকে এবং টিনেজে প্রায়শই দেখা যায়। তবে অনেক সময় ২৫-৩০, এমনকি ৩৫-৫০ বয়সীদেরও ব্রণের সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। এই বয়সীদের ব্রণ বা একনেকেই এককথায় অ্যাডাল্ট একনে বা প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণ বলা হয়। এই ব্রণের ক্ষেত্রে ফোলাভাব, লালচেভাব, জ্বালা করা ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত পোরস ক্লগ হয়ে ইনফ্ল্যামেশন হওয়া, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, পিএইচ লেভেল ইমব্যালেন্স, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ, বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত তেল চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান না করা, ঘুম কম হওয়া, ত্বকে অতিরিক্ত তেল বা সেবাম উৎপন্ন হওয়া ইত্যাদির জন্য এই একনে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়।

অ্যাডাল্ট একনে

কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এমন ব্রণ থেকে?

টিনেজে যখন একনে প্রবলেম একবার ফেইস করে এসেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে নিশ্চয়ই অ্যাডাল্ট একনে নতুন করে ফেইস করতে ভালো লাগবে না, তাই না? এমন একনে থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কয়েকটি উপায় চলুন জেনে নেয়া যাক-

১) স্ট্রেস, মানসিক চাপ কমানো

জীবনে অনেক স্ট্রেস, দৈনন্দিন ব্যস্ততা সবারই কমবেশি থাকে, মানসিকভাবে অশান্তি থাকে। এরপরও জীবনকে ভালোবাসতে হবে আর ভালোবাসতে হবে নিজেকে। মানসিক স্ট্রেস দূর করার জন্য মেডিটেশন, হালকা ব্যায়াম, ইয়োগা ছাড়াও নিজেকে চিন্তামুক্ত রাখা এবং হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করলে শরীর, মন আর ত্বক সুন্দর থাকে। যার কারণে ব্রণের সংক্রমণ কমে।

২) খাদ্যতালিকায় জিংকের পরিমাণ বাড়ানো

জিংক মূলত খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে যেয়ে অ্যান্টিবায়োটিক এর কাজ করে। এজন্য জিংককে ওরাল অ্যান্টিবায়োটিকও বলা হয়। খাবারে জিংকের পরিমাণ বাড়ালে সেবাম প্রোডাকশন কমে, একনে/ব্রণের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিক এর কাজ করে, এছাড়াও ব্রণের ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিহত করে। সুতরাং যেসব খাবারে জিংক এর পরিমাণ বেশি আছে সেগুলো খেতে হবে। এ ধরনের খাবারের মধ্যে আছে যেকোনো ধরনের বাদাম, ডিম, রেড মিট বা লাল মাংস যেমন- গরু, খাসি, মহিষ ইত্যাদি। এসব খাবারের পাশাপাশি কেউ চাইলে জিংক সাপ্লিমেন্টও খেতে পারেন। এই সাপ্লিমেন্টও একনে প্রিভেন্টে ভালো কাজ করে।

অ্যাডাল্ট একনে দূর করতে খাদ্যতালিকায় জিংকযুক্ত খাবার অ্যাড করতে হবে

৩) মিষ্টি ও অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার বাদ দেওয়া

মিষ্টি জাতীয় খাবার বিশেষত সাদা চিনির খাবার ত্বক ও শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য বেশ ক্ষতিকর। চিনিযুক্ত বা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার শরীরের কোষগুলোর ক্ষতি করে এবং ব্রণ বা একনে, এজিং সাইনস দেখা দেয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে। ঠিক এমনই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে তেল চর্বিযুক্ত ও অতিরিক্ত মশলাদার খাবার। এ ধরনের খাবার হজমে ব্যাঘাত ঘটায়, যার ফলে শারীরবৃত্তীয় কাজেরও ব্যাঘাত ঘটে। এসব খাবার একনে বাড়ায়, তাই হেলদি ডায়েট অবশ্যই মেনটেইন করতে হবে।

৪) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা

পানি পান করার সাথে হয়তো ব্রণ বা একনের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সঠিক পরিমাণে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পান করে তাদের ব্রণের সমস্যা কম হয়। এছাড়াও শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে, যার ফলে ত্বক থাকে প্লাম্পি ও হাইড্রেটেড। এর ফলে তাদের ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ কম হয়। যারা সারাদিন গরম পরিবেশে থাকে অথবা গ্রীষ্মকালে যখন তাপমাত্রা খুব বেশি হয় তখন বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা উচিত৷ এছাড়াও যারা এয়ার কন্ডিশনের মধ্যে দীর্ঘ সময় থাকেন, তাদেরকেও সঠিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে, নইলে ডিহাইড্রেশন দেখা দিবে। আর এই ডিহাইড্রেশন শরীরে প্রভাব ফেলবে এবং ত্বক হবে শুষ্ক। তাছাড়া ডিহাইড্রেশন হলে হরমোন তার ভারসাম্য হারায় আর দেখা দেয় একনে বা ব্রণ। তাই পরিমাণমতো পানি পান করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্করা দিনে অন্তত ২-৩ লিটার পানি অবশ্যই পান করবেন।

পানি পান করা

৫) শরীরে ভিটামিন এ এর পরিমাণ বাড়ানো

একনে প্রিভেন্ট করতে এবং সেবাম প্রোডাকশন কমাতে ভিটামিন এ যেমন খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা যায়, তেমনই রেটিনল, রেটিনয়েড হিসেবে স্কিনকেয়ারেও ইনক্লুড করা যায়। ব্রণের সমস্যা কমানোর জন্য প্রথমত ভিটামিন এ খাদ্য তালিকায় অবশ্যই যুক্ত করতে হবে। সাধারণত হলুদ ও লাল রঙের সবজি, ছোট মাছ (মলা, ঢেলা, কাচকি), দুধ, মাখন, কড লিভার অয়েল, ঘি, টার্কির কলিজা, গরুর কলিজা, মাংস, ডিম, গাজর, পালংশাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি, সরিষা শাক, লাল মরিচ, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, লেটুস, আম, জাম্বুরা, পাকা পেঁপে ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। তাই এই খাবারগুলোর পরিমাণ রেগুলার খাদ্য তালিকায় বাড়াতে হবে। এছাড়াও চাইলে ত্বকের যত্নে রেটিনল, রেটিনয়েড যুক্ত করা যাবে (অবশ্যই যাদের বয়স ২৪/২৫ বা তার বেশি তাদের ক্ষেত্রে)।

৬) ডক্টরের কনসালটেশন

যদি উপরোক্ত সমাধানগুলো সঠিকভাবে মেনে চলার পরেও ব্রণ এর সংক্রমণ না কমে তাহলে অবশ্যই স্কিন স্পেশালিষ্ট ডক্টরের কনসালটেন্ট নিতে হবে।

 

অ্যাডাল্ট একনে দেখা দিলে বোঝার চেষ্টা করুন লাইফস্টাইলের কোথায় পরিবর্তন আনা জরুরি। সেই সাথে স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করুন অথেনটিক প্রোডাক্টস। অথেনটিক স্কিনকেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্ট পেয়ে যাবেন সাজগোজে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

ছবিঃ সাটারস্টক

 

The post অ্যাডাল্ট একনে থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোনো উপায় আছে কি? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/wX15gW3
Previous Post
Next Post

0 comments: