Wednesday, November 5, 2025

কেমিক্যাল কি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর? সত্যি না ভ্রান্ত ধারণা?

কেমিক্যাল কি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর? সত্যি না ভ্রান্ত ধারণা?

আমাদের স্কিন কেয়ার নিয়ে একটি প্রচলিত ভুল ধারণা আছে—“কেমিক্যাল মানেই ক্ষতিকর” এবং “প্রাকৃতিক মানেই নিরাপদ”। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সব কেমিক্যাল ত্বকের জন্য ক্ষতিকর নয়, আবার সব প্রাকৃতিক উপাদানও উপকারী নয়। তাই স্কিনকেয়ার নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে প্রথমেই জানতে হবে—কেমিক্যাল কি ত্বকের জন্য সত্যিই ক্ষতিকর? নাকি এটি শুধু একটি বিভ্রান্তিকর ধারণা?
চলুন বিষয়টি বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যসহ পরিষ্কারভাবে জানি।

কেমিক্যাল মানেই ত্বকের ক্ষতি নয় কেন?

কেমিক্যাল বা রাসায়নিক শব্দটি শোনার সাথে সাথে অনেকের মাথায় ভেসে ওঠে ক্ষতিকর, বিষাক্ত বা কৃত্রিম জিনিসের ছবি। কিন্তু আসলে রাসায়নিক মানে হলো — যে কোনো পদার্থ, যার একটি নির্দিষ্ট গঠন (composition) আছে এবং যা এক বা একাধিক মৌল দিয়ে তৈরি।
সেই অর্থে পানিও কিন্তু একধরনের কেমিক্যাল। কিন্তু এখন কি আমি বলব পানি আমাদের ত্বকের ক্ষতি করে? নিশ্চই না। ঠিক এরকমই কিছু কেমিক্যাল ত্বকের জন্য হতে পারে বেশ উপকারী আর সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

কেমিক্যাল ত্বকের জন্য সবসময় ক্ষতিকর নয়

ত্বকের জন্য নিরাপদ এবং উপকারী কিছু কেমিক্যাল

  • হায়ালুরোনিক অ্যাসিড (Hyaluronic Acid): এটি একটি জনপ্রিয় হিউমেক্ট্যান্ট, যা ত্বকের ভেতর আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ত্বকের হাইড্রেশন ৯৬% পর্যন্ত বাড়াতে এবং ফাইন লাইনস কমাতে সহায়তা করে (সূত্র: Journal of Clinical and Aesthetic Dermatology, 2014)।
  • নিয়াসিনামাইড (Niacinamide): ভিটামিন বি৩-এর একটি ফর্ম, যা প্রদাহ কমায়, ব্রণের লালচে দাগ হালকা করে এবং ত্বকের ব্যারিয়ার মজবুত করে।
  • গ্লিসারিন (Glycerin): বহু বছর ধরে ব্যবহৃত একটি নিরাপদ ময়েশ্চারাইজার, যা ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।

কখন কেমিক্যাল ত্বকের ক্ষতি করে?

সব কেমিক্যাল নিরাপদ নয়। বিশেষ করে অবৈজ্ঞানিক, নিম্নমানের, ফেয়ারনেস ক্রিমে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক ত্বকের বড় ক্ষতি করতে পারে।

অতিরিক্ত মাত্রার কেমিক্যাল ত্বকের ক্ষতি করতে পারে

ত্বকের ক্ষতি করতে পারে এমন কিছু কেমিক্যাল

  • Hydroquinone: অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিমে ব্যবহার
  • Topical Steroid: ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড যুক্ত পণ্য ব্যবহার
  • অতিরিক্ত Fragrance + Alcohol

    এসব উপাদান স্কিন ব্যারিয়ার নষ্ট করে, ত্বক পাতলা করে, দীর্ঘমেয়াদে কিডনি–লিভারের ক্ষতি পর্যন্ত করতে পারে।

প্রাকৃতিক উপাদান মানেই নিরাপদ নয় কেন?

অনেকেই রূপচর্চার ক্ষেত্রে ঘরোয়া পদ্ধতিতে অনেক প্রাকৃতিক উপাদান সরাসরি স্কিনে ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। কিন্তু প্রাকৃতিক উপাদানও ত্বকে অ্যালার্জি, জ্বালা ও পিগমেন্টেশন তৈরি করতে পারে।

প্রাকৃতিক উপাদানের সরাসরি ব্যবহার ত্বক ড্যামেজ করতে পারে

  • লেবুর রসঃ অনেকেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে লেবুর রস সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করেন। কিন্তু এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ত্বকে অতিরিক্ত শুষ্কতা ও জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি সূর্যের আলোতে পিগমেন্টেশনও বাড়াতে পারে।
  • হার্শ স্ক্রাবঃ চালের গুড়া, কফি এগুলো প্রাকৃতিক হলেও স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বকের উপরিভাগে মাইক্রো-টিয়ার সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ত্বকের ব্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • আলুর রস: অনেকের ধারণা আলু দাগ-ছোপ দূর করে, কিন্তু এটি সব ধরনের ত্বকে কার্যকর নয় এবং সংবেদনশীল ত্বকে অ্যালার্জি বা জ্বালা তৈরি করতে পারে, পাশাপাশি স্কিন ড্রাই করতে পারে।

কাজেই সব কেমিক্যাল যে ক্ষতিকর তা নয়, আবার সব প্রাকৃতিক উপাদানও যে উপকারী তা নয়। ত্বকের ধরন, সমস্যা এবং বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রোডাক্ট নির্বাচন করাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।

FAQ (Frequently Asked Questions)

প্রশ্ন ১: সব কেমিক্যাল কি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তর: না। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড, গ্লিসারিনের মতো অনেক কেমিক্যাল বৈজ্ঞানিকভাবে নিরাপদ এবং উপকারী।

প্রশ্ন ২: কোন কেমিক্যাল স্কিনে ব্যবহার করা উচিত নয়?
উত্তর: অজানা ব্র্যান্ডের ফেয়ারনেস ক্রিম, স্টেরয়েড ক্রিম, উচ্চমাত্রার হাইড্রোকুইনোন ক্ষতিকর।

প্রশ্ন ৩: প্রাকৃতিক উপাদান কি সবসময় নিরাপদ?
উত্তর: না। লেবু, কফি স্ক্রাব, আলুর রস অনেক সময় ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।

প্রশ্ন ৪: কীভাবে বুঝব কোন কেমিক্যাল স্কিনে নিরাপদ?
উত্তর: ডার্মাটোলজিস্টরা যা অনুমোদন দেন, কেমিক্যালের সঠিক কনসেনট্রেশন, ফরমুলেশন ও গবেষণাভিত্তিক ডেটা দেখেই নির্বাচন করতে হবে।

The post কেমিক্যাল কি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর? সত্যি না ভ্রান্ত ধারণা? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/Vck18Ze
Continue reading

Monday, October 13, 2025

স্ট্রেস কমাতে কী খাবেন? জানুন বিজ্ঞানসম্মত ৫টি খাবার

স্ট্রেস কমাতে কী খাবেন? জানুন বিজ্ঞানসম্মত ৫টি খাবার

গবেষণায় দেখা গেছে,সঠিক খাবার মানসিক চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই আজ জানুন স্ট্রেস কমাতে কী খাবেন এবং কোন খাবারগুলো সত্যিই কাজ করে।

স্ট্রেস হলে শরীরে কী ঘটে?

আপনি কি খেয়াল করেছেন—স্ট্রেস হলে শরীরটা ভারী লাগে, মাথা গরম হয়, মন অস্থির হয়? এর পেছনে বড় কারণ হলো কর্টিসল, যাকে বলা হয় স্ট্রেস হরমোন।
এখন প্রশ্ন হলো—এই কর্টিসল কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? ওষুধ বা মেডিটেশনের পাশাপাশি খাবারও এ ব্যাপারে বিশাল ভূমিকা রাখে। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের বাংলাদেশের বাজারেই আছে এমন অনেক খাবার, যেগুলো প্রতিদিন খেলেই মন-শরীর শান্ত থাকে।

চলুন, জেনে নিই বাংলাদেশে সহজলভ্য ৫টি খাবার যা স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

স্ট্রেস কমাতে কী খাবেন?

১. শাক-সবজি

বলুন তো, শেষ কবে লাল শাক বা পালং শাক খেলেন? আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই বিভিন্ন শাক পাওয়া যায়।
এগুলো ভরা থাকে ম্যাগনেশিয়াম-এ, যা স্নায়ুকে শান্ত করে আর কর্টিসল কমায়।

খাওয়ার উপায়:

  • ভাতের সাথে এক বাটি শাক ভাজি রাখুন।
  • পালং শাক দিয়ে ডাল রান্না করুন।

হেলদি টিপস: অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করে সামান্য রসুন দিয়ে ভাজুন।তাতে স্বাদও থাকবে,স্বাস্থ্যও ঠিক থাকবে।

২. মাছ

ইলিশ, রুই, কাতলা বা কই মাছে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মস্তিষ্ক সতেজ রাখে এবং কর্টিসল কমায়।

হেলদি টিপস: ভাজা মাছের থেকে ঝোল বা স্টিম মাছ খাওয়া বেশি ভালো, এতে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না।

৩. বাদাম ও বীজ

চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, কুমড়ার বীজ বা সূর্যমুখীর বীজ—এসব আমাদের দেশে সহজেই পাওয়া যায়।

এগুলোতে আছে হেলদি ফ্যাট, ভিটামিন বি৬ ও ম্যাগনেশিয়াম। যা কর্টিসল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ক্ষুধাও মেটায়।

খাওয়ার উপায়:

  • বিকেলে চা-এর সাথে একমুঠো বাদাম খান।
  • সকালে ওটস বা দইয়ের সাথে কিছু বাদাম/বীজ মিশিয়ে নিন।

হেলদি টিপস: নোনতা বা অতিরিক্ত ভাজা বাদামের বদলে কাঁচা বা হালকা ভাজা বাদাম খান।

৪.দেশি ফল 

আম, কলা, পেয়ারা, পেঁপে, জাম—এসব দেশি ফলে ভরা আছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

এগুলো শরীরের ভেতরের চাপ কমায়, মন ভালো করে আর এনার্জিও জোগায়।

খাওয়ার উপায়:

  • সকালের নাস্তায় কলা খান।
  • দুপুরের পর পেয়ারা বা পেঁপে খান।

হেলদি টিপ: ফলের জুস নয়, সরাসরি ফল খান। এতে ফাইবার পাবেন, হজমও ভালো হবে।

৫.হোলগ্রেইন

লাল চাল, গমের রুটি বা ওটস ধীরে ধীরে এনার্জি দেয়, কর্টিসল বাড়তে দেয় না।

খাওয়ার উপায়:

  • সকালে গমের রুটি বা ওটস রাখুন।
  • দুপুরে বা রাতে লাল চালের ভাত খান।

স্ট্রেস কমাতে আরও কী করবেন?

  • দিনে কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করুন
  • প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট হাঁটুন
  • পর্যাপ্ত ঘুমান (৬–৮ ঘণ্টা)
  • অতিরিক্ত চিনি, ভাজাপোড়া আর সফট ড্রিঙ্ক কমান

স্ট্রেস আজকের জীবনের অংশ, কিন্তু আমরা চাইলে বাজারে সহজলভ্য এই শাক-সবজি, মাছ, বাদাম, ফল আর সম্পূর্ণ শস্য—এসব নিয়মিত খেলে কর্টিসল নিয়ন্ত্রণে থাকবে,মন ভালো হবে, শরীর হালকা লাগবে।

তাহলে আজ থেকেই ভাবুন—আপনার প্লেটে কী আছে, আর সেটা আপনার মুডের ওপর কী প্রভাব ফেলছে? হয়তো এক বাটি শাক বা এক মুঠো বাদামই হয়ে উঠতে পারে আপনার দিনের সবচেয়ে বড় স্ট্রেস রিলিফ।

ছবি- সাটারস্টক

The post স্ট্রেস কমাতে কী খাবেন? জানুন বিজ্ঞানসম্মত ৫টি খাবার appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/oX7zuWt
Continue reading

Monday, September 15, 2025

সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা সামলানোর ৫টি কৌশল

সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা সামলানোর ৫টি কৌশল

আপনি কি প্রতিদিন সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা শুনে ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন? “কেন আমার সন্তান কথা শুনছে না?” বা “সন্তান যখন রেগে যায়, তখন কী করা উচিত?”—এ ধরনের প্রশ্ন অনেক বাবা-মার মনকে ক্লান্ত করে। যখন সন্তান কথা শুনছে না বা বারবার অভদ্রভাবে জবাব দিচ্ছে, তখন নিজেকে শান্ত রাখা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু এই সময়টাতেই অভিভাবক হিসেবে নিজের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এই ফিচারে আপনারা জানবেন কীভাবে মাত্র ৫টি কৌশলে শান্তি বজায় রেখেই সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা সামলানো যায়।

সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল

১. নিজে শান্ত থাকুন

সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তায় আপনার ভেতরের রাগ জেগে ওঠাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঠিক তখনই যদি আপনি শান্ত থাকেন, তাহলে সে শিখবে—উত্তেজনা বা বেয়াদবি কোনো সমস্যার সমাধান নয়।

  • চুপচাপ দশ সেকেন্ডের জন্য শ্বাস নিন
  • প্রয়োজনে একটু সময় নিয়ে নিন নিজের জন্য
  • আপনার প্রতিক্রিয়া দেখে সন্তান ধীরে ধীরে শিখবে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়।

২. ঘরে সহজ নিয়ম গড়ে তুলুন

শিশুরা নির্দিষ্ট সীমা না জানলে সহজেই বিভ্রান্ত হয়। “আমরা ভদ্রভাবে কথা বলি”, “রেগে গেলেও গালাগালি করি না”—এ ধরনের নিয়ম ছোট বাক্যে বোঝান।

  • নিয়মগুলো ঝগড়ার সময় নয়, শান্ত অবস্থায় আলাপ করে ঠিক করুন
  • সঙ্গে জানিয়ে দিন, নিয়ম মানা না হলে কী ফলাফল হবে।
    যেমন—খেলার সময় কমে যাবে, অথবা স্ক্রিন টাইম হ্রাস পাবে।এভাবে শিশু শৃঙ্খলার গুরুত্ব শিখবে ।

৩. মনোযোগ দিয়ে শুনুন

অনেক সময় সন্তান অভিমান বা কষ্ট থেকে বাজে আচরণ করে।
এসময় আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন—“তুমি রেগে গেছো নাকি? কী হয়েছে?”—সে বুঝবে আপনি তার পাশে আছেন।
বলুন, “আমি শুনব, কিন্তু ভদ্রভাবে বলো।”
এভাবে কথা বললে তার মধ্যে নিরাপত্তা ও শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হবে।

৪. ভালো আচরণে প্রশংসা করুন

শুধু সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তার জন্য শাস্তি নয়, বরং যখনই সন্তান সুন্দরভাবে কথা বলবে বা নিয়ম মানবে, তখনই প্রশংসা করুন। মাঝে মাঝে ছোট পুরস্কার দিন। এতে তারা বুঝবে—ভালো ব্যবহারের ফলাফল ভালো হয়।

৫. ধারাবাহিক হোন, ধৈর্য ধরুন

শিশুর আচরণ একদিনে বদলায় না। তাই নিয়ম মানলে যেমন প্রশংসা করবেন, না মানলে সেই একই নিয়মে শান্তভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান।
শিশু যেন বিভ্রান্ত না হয়ে যায়। ধৈর্য ধরুন, বারবার মনে করিয়ে দিন এবং উন্নতির জন্য উৎসাহ দিন। আর যদি দেখেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, তবে চাইল্ড সাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিতে দ্বিধা করবেন না।

সন্তান যখন অভদ্রভাবে কথা বলে, তখন তা শুধু আপনার ধৈর্যের পরীক্ষাই নয়, বরং একটি শেখানোর সুযোগও। আপনি যদি ধৈর্য ধরে নিয়মিত সাড়া দেন, তাহলে ধীরে ধীরে সে শিখে যাবে—কীভাবে সম্মান দেখাতে হয়, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়।
আপনার ভালোবাসা, ধৈর্য আর দৃঢ় অবস্থানই একদিন তাকে করে তুলবে একজন দায়িত্বশীল মানুষ।

ছবি- সাটারস্টক

The post সন্তানের অবাধ্য কথাবার্তা সামলানোর ৫টি কৌশল appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/4wIbEHl
Continue reading

Thursday, July 31, 2025

মিরর সেলফি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন ট্রেন্ডের পেছনের গল্প

মিরর সেলফি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন ট্রেন্ডের পেছনের গল্প

সোশ্যাল মিডিয়ার যে কোনও প্ল্যাটফর্মে এখন মিরর সেলফি কেন এত জনপ্রিয়? আজকের লেখায় জানবেন ছবি তোলার এই নতুন ট্রেন্ডের জনপ্রিয়তার রহস্য।

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ বুলালেই চোখে পড়ে— আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তোলা স্টাইলিশ ছবি। ক্যামেরা হাতে, মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা একজন মানুষ, পেছনে সাজানো ঘর কিংবা রুচিশীল ব্যাকগ্রাউন্ড। এই ছবির নামই এখন পরিচিত “মিরর সেলফি” নামে। এই সেলফির ধরনটি এতটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে সময়ের সাথে পরিবর্তিত সোশ্যাল ট্রেন্ড, আত্মপ্রকাশের নতুন ভাষা ও ফ্যাশন-সচেতন সমাজের মনস্তত্ত্ব।

মিরর সেলফি তুলতে যে কেউ ভালোবাসে এখন

মিরর সেলফি কেন এত জনপ্রিয় হল?

১. OOTD শেয়ার করার সহজ উপায়

“Outfit of the Day” বা OOTD ফ্যাশন জগতে এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন্ড।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সম্পূর্ণ লুক দেখানো যায় খুব সহজেই—কাউকে সাহায্য করতে বলতে হয় না, টাইমারও লাগেনা।
ইনস্টাগ্রামে এমন সেলফিগুলো হাজার হাজার ফলোয়ার তৈরি করছে প্রতিদিন।

২. নিজের কনটেন্ট নিজেই কন্ট্রোল করা যায়

মিরর সেলফি মানেই—ক্যামেরা নিজের, কোণ নিজের, আলো নিজের মত করে ঠিক করা। এক্ষেত্রে কেউ আপনাকে নির্দেশনা দিচ্ছে না।
আপনি ঠিক করছেন—চেহারা কেমন থাকবে, এক্সপ্রেশন কী হবে, ব্যাকগ্রাউন্ডে কী থাকবে। এই স্বাধীনতা অনেকের জন্যই আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলে।

৩. সহজে, কম খরচে কনটেন্ট

পেশাদার ফটোশুটের জন্য যেখানে আলাদা আলোকসজ্জা, মেকআপ, ফটোগ্রাফার দরকার হয়, সেখানে মিরর সেলফি হতে পারে তার চেয়ে অনেক সস্তা ও সহজ বিকল্প।
একটি আয়না, মোবাইল আর স্বাভাবিক আলো—এই তিনেই তৈরি হয়ে যায় নান্দনিক ছবি।

মিরর সেলফি আত্মবিশ্বাস ও আত্মপ্রকাশের মাধ্যম

৪. আত্মবিশ্বাস ও আত্মপ্রকাশের মাধ্যম

অনেক সময় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা মানে নিজেকে ভালোভাবে দেখা ও গ্রহণ করা।
কেউ কেউ এটাকে আত্মমুগ্ধতা বলে মনে করলেও, এটি একধরনের আত্ম-অনুসন্ধানও।
“আমি যেমন, তেমনভাবেই নিজেকে ভালোবাসি”—এই বার্তাটিই যেন প্রতিফলিত হয় ছবিতে।

৫. ফ্যাশন কালচার ও পিন্টারেস্ট-এ দাপট

Pinterest-এ যদি আপনি ‘mirror selfie’ লিখে সার্চ করেন, দেখবেন হাজার হাজার ছবি।
সবকিছু নিয়েই রয়েছে ভিজ্যুয়াল আইডিয়া।
মিরর সেলফি এখানে শুধু ছবি নয়, এটি একটি লাইফস্টাইল ট্রেন্ড।

সোশ্যাল মিডিয়া যুগে আত্মপরিচয়ের প্রতিচ্ছবি

মিরর সেলফি এখন একটা ছবির ধরন নয় শুধু—এটা একধরনের ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ। আয়নার মাধ্যমে নিজের প্রতিফলন ধরে রাখা আমাদের শেখায়—নিজেকে দেখা, নিজের ভালো দিক তুলে ধরা এবং নিজেদের মতো করে গর্ব করা।

সেলফি তুলতে আয়না পরিষ্কার রাখুন

মিরর সেলফি কে আরও আকর্ষণীয় করবেন কীভাবে?

  • আয়না পরিষ্কার রাখুন
  • প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করুন
  • মোবাইল ভালোভাবে ধরুন
  • এলোমেলো ব্যাকগ্রাউন্ড এড়িয়ে চলুন
  • ছবির এডিটিং হালকা রাখুন

এখনকার তরুণ প্রজন্মের আত্মপ্রকাশ, ফ্যাশনচেতনা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক মিরর সেলফি। এই জনপ্রিয়তা কমার নয়, বরং সময়ের সাথে এটি আরও নতুন মাত্রা পাবে—নতুন ভঙ্গিতে, নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে।

মিরর সেলফি তুলতে আপনি কতোটা পছন্দ করেন তা জানিয়ে দিন কমেন্ট করে, সেই সাথে লেখাটি ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে।

ছবি – সাটারস্টক

 

The post মিরর সেলফি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন ট্রেন্ডের পেছনের গল্প appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/20RLkWC
Continue reading

Wednesday, July 30, 2025

বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক সচল রাখার উপায় | ৯টি কার্যকর পদ্ধতি

বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক সচল রাখার উপায় | ৯টি কার্যকর পদ্ধতি

বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক সচল রাখার উপায় জানেন? আজকের লেখায় থাকছে এমন ৯টি সহজ কিন্তু কার্যকর পরামর্শ, যা আপনার চিন্তাশক্তি, স্মরণশক্তি এবংমানসিক দক্ষতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের পাশাপাশি মস্তিষ্কেও পরিবর্তন আসে—এটাই স্বাভাবিক। অনেকেই হয়তো খেয়াল করেন, চাবির গোছা কোথায় রেখেছেন ভুলে যাচ্ছেন, কথার মাঝে সঠিক শব্দ মনে করতে পারছেন না কিংবা নাম মনে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। এইসব বিষয় মানেই কিন্তু ডিমেনশিয়া নয়, তবে এগুলো এড়াতে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে কিছু সহজ ও বৈজ্ঞানিক উপায় আছে।

আজকের আলোচনায় জানাবো এমনই ৯টি কার্যকর পদ্ধতি, যা বয়স বাড়লেও আপনার চিন্তাশক্তি, স্মরণশক্তি এবং মানসিক উৎকর্ষ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক সচল রাখা সম্ভব

বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক সচল রাখার উপায়

১. রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন:

উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়, যা মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে এবং ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। এই সমস্যা প্রতিরোধ করতে-

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন
  • নিয়মিত হাঁটুন
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
  • রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
  • সময়মতো রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা করুন

২. ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান পরিহার করুন:

ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করতে পারে এবং স্মরণশক্তি দুর্বল করে।
তাই ধূমপান সম্পূর্ণ ত্যাগ করুন এবং মদ্যপানে সীমারেখা টানুন।

৩. নিয়মিত ব্যায়াম করুন:

নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং সেটা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।
হাঁটাহাঁটি করা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো বা হালকা যোগব্যায়াম মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়।
যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি এক-তৃতীয়াংশ কম।

মস্তিষ্কবান্ধব খাদ্য বেছে নিন

৪. পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন:

মস্তিষ্ককে সচল রাখতে এমন খাদ্য বেছে নিন যা পুষ্টিকর।
মস্তিষ্কবান্ধব খাদ্য, যেমন—সবুজ শাকসবজি, বাদাম, বীজ, সামুদ্রিক মাছ, বেরি ফল ও অলিভ অয়েল ইত্যাদি। এছাড়াও ‘মাইন্ড ডায়েট’ অনুসরণ করলে মস্তিষ্কের বয়সজনিত ক্ষয় কমে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ে।

৫. মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখুন:

আপনার চিন্তাভাবনাকে সচল রাখতে নতুন কিছু শিখুন।
যেমন নতুন ভাষা শেখা, বাদ্যযন্ত্র বাজানো, বই পড়া, গল্প লেখা ইত্যাদি।
এধরনের কাজ মস্তিষ্কের নিউরনগুলো সক্রিয় রাখে এবং বয়সের সাথে সাথে এর কার্যক্ষমতা কমে না।

সামাজিক সম্পর্কগুলো বজায় রাখলে মন ভালো থাকবে

৬. সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখুন:

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা একাকীত্বে ভোগেন তাদের মস্তিষ্কের ধূসর পদার্থ কমে যায় এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ২৬%-২৮% বেড়ে যায়।
তাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখুন।

৭. নিয়মিত যৌন জীবন বজায় রাখুন:

অনেকেই যৌন জীবনের গুরুত্ব ভুলে যান বয়স বাড়লে, কিন্তু এটি শুধু সম্পর্ক নয়, মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। যৌন তৃপ্তি মানে মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা, যা মস্তিষ্ককে তরতাজা রাখে।

৮. মস্তিষ্কের খেলা খেলুন:

স্মরণশক্তি ও চিন্তাশক্তি বাড়াতে পাজল, দাবা, স্যুডোকু বা স্মৃতিনির্ভর খেলা খেলতে পারেন।
যদিও এগুলো ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করে না, তবে এটি আপনার বুদ্ধির পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণের কাজ করে।

দিনে অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা গভীর ও টানা ঘুম দরকার

৯. পর্যাপ্ত ঘুমান:

ঘুমের সময় মস্তিষ্ক বর্জ্য পদার্থ দূর করে, যা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমায়।
দিনে অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা গভীর ও টানা ঘুম দরকার।
যারা দিনে ৫ ঘণ্টার কম ঘুমান তাদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ এবং মৃত্যুঝুঁকি ২.৪ গুণ বেশি।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

বয়সের বাড়ার সাথে সাথে কিছুটা ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক, তবে যদি বারবার একই প্রশ্ন করেন, পরিচিত মানুষের নাম ভুলে যান, দৈনন্দিন কাজে অসুবিধা হয়—তাহলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখা কোনো কঠিন কাজ নয়। একটু সচেতনতা, নিয়মিত অভ্যাস এবং ইতিবাচক জীবনধারা গড়ে তুললেই বয়স বাড়লেও বুদ্ধি ও স্মৃতি ধরে রাখা যায়।
আপনার চারপাশে যদি কেউ বয়সজনিত স্মৃতিভ্রান্তি বা মনোযোগ কমে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন, তাহলে এই লেখাটি তাদের সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করুন।

ছবি- সাটারস্টক

The post বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক সচল রাখার উপায় | ৯টি কার্যকর পদ্ধতি appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/vjGCB2d
Continue reading

Wednesday, July 23, 2025

দুর্ঘটনার পর শিশুর ট্রমা কাটিয়ে তুলতে বাবা-মা কীভাবে সাহায্য করবেন?

দুর্ঘটনার পর শিশুর ট্রমা কাটিয়ে তুলতে বাবা-মা কীভাবে সাহায্য করবেন?

দুর্ঘটনার পর শিশুর ট্রমা যেন নিঃশব্দ এক ভূমিকম্পের মতো—চোখে দেখা যায় না, অথচ ভেতরে সবকিছু ভেঙেচুরে দেয়। একটা হঠাৎ আগুন লাগা বা বিস্ফোরণের ঘটনা, কোনও গাড়ি দুর্ঘটনা বা কাছের কাউকে রক্তাক্ত হতে দেখা অথবা কারো মৃত্যু প্রত্যক্ষ করা —এই সব অভিজ্ঞতা শিশুদের মনে গভীর ভীতি সৃষ্টি করতে পারে। আর সেটাই হয়ে ওঠে শিশুর ট্রমা।

মার্কিন সংস্থা CDC (Centers for Disease Control and Prevention)-র তথ্য অনুযায়ী, ৮০% এর বেশি শিশুই জীবনের কোনও না কোনও সময় ট্রমাটিক ঘটনার মধ্য দিয়ে যায়। আর সময়মতো সাড়া না দিলে এই মানসিক ক্ষত দীর্ঘমেয়াদে শিশুর আচরণ, ঘুম, আবেগ ও মনোযোগে প্রভাব ফেলে।

আকস্মিক কোনও দুর্ঘটনার স্বীকার হলে শিশুরা মানসিকভাবে যে বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যায়, তখন বাবা মা হিসেবে আপনারা তাদের কীভাবে সাহায্য করতে পারেন- সে বিষয়েই আমাদের আজকের লেখা।

দুর্ঘটনার পর শিশুর ট্রমা দূর করতে বাবা মায়ের করণীয়

শিশুদের ট্রমা কীভাবে বোঝা যায়?

দুর্ঘটনার কথা মনে করে শিশু আতঙ্কিত হতে পারে

শিশুরা অনেক সময় ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না তাদের ভেতরের ভয়। অতিরিক্ত আতঙ্কে অনেক সময়ই শিশু তার আবেগ অনুভূতির সঠিক প্রকাশ করতে পারে না।

এরকম অবস্থায় ট্রমার লক্ষণগুলো বেশিরভাগ সময় শিশুর আচরণেই ধরা পড়ে।

১. হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যাওয়া

২. বারবার সেই ঘটনার কথা বলা বা আঁকা

৩. ঘুমে সমস্যা, দুঃস্বপ্ন

৪. অকারণে ভয় পাওয়া, মা-বাবাকে আঁকড়ে ধরা

৫. খাওয়ায় অনীহা বা অতিরিক্ত চঞ্চলতা, রেগে যাওয়া

৬. দুর্ঘটনার স্থান বা তার সাথে সম্পর্কিত কিছু পরবর্তীতে দেখলেও আতঙ্কিত হয়ে যাওয়া

গবেষণায় বলা হয়, শিশুদের ব্রেইন গাঠনিক পর্যায়ে থাকায় তারা স্ট্রেস বা দুর্ঘটনার প্রভাব আরও তীব্রভাবে অনুভব করে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, শিশুরা যেভাবে একটি ঘটনা মনে রাখে, তাতে সেটি তাদের ভবিষ্যৎ আচরণ ও আবেগকে এবং তার মানসিক বিকাশ কে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। কাজেই, শিশু কোনও ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে গেলে অবশ্যই তার মানসিক যত্নের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

শিশুর ট্রমা দূর করতে বাবা মা কীভাবে সাহায্য করবেন?

শিশুর ভয় দূর করতে তাকে জড়িয়ে ধরুন

১. শিশুকে নিরাপদ অনুভব করান

দুর্ঘটনার পর শিশুর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিরাপত্তা বোধ।
তাকে বারবার আশ্বস্ত করুন—”তুমি এখন নিরাপদ”, “তোমার পাশে আমরা আছি।”

২. জোর করে ভুলিয়ে দিতে যাবেন না

অনেক সময় আমরা বলি, “আর ভেবো না, ওসব কেটে গেছে।”
কিন্তু শিশুর মন তখনও আটকে আছে সেই ভয়াল মুহূর্তে।
তাই তাকে বোঝান, আপনি আছেন, শুনছেন এবং তার মনের অবস্থা অনুভব করছেন।

৩. স্পর্শের মাধ্যমে শিশুকে ভরসা দিন

ছোট ছোট স্পর্শ শিশুর ভেতরের ভেঙ্গে যাওয়া আত্মবিশ্বাস গড়তে সাহায্য করে।
মায়ের কোলে ঘুম, বাবার হাতে হাত রেখে হাঁটা, আলিঙ্গন- এতে শিশু ভালো বোধ করে ।

শিশু কে নিরাপদ বোধ করান

৪. শিশুকে কথা বলতে দিন

গল্প বলার সময় শিশুটি যদি বারবার দুর্ঘটনার স্মৃতি বলে, থামিয়ে দেবেন না।
এটি ট্রমা কাটানোর প্রক্রিয়ার অংশ।
তাকে আঁকতে দিন, বলতে দিন- মনের কথা বেরিয়ে আসতে দিন।
তবে জোর করে কিছু বলাতে যাবেন না।

৫. রুটিনে ফিরিয়ে আনুন

ট্রমা কাটানোর এক শক্তিশালী উপায় হল শিশুকে চেনা রুটিনে ফিরিয়ে আনা।
ঘুম, খাওয়া, খেলা সময়মতো হলে শিশু একরকম স্বস্তি ও নিয়ন্ত্রণবোধ ফিরে পায়।

৬. প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন

যদি লক্ষণগুলো কিংবা ভয় বাড়তেই থাকে—তাহলে চাইল্ড সাইকোলজিস্ট বা কাউন্সেলরের সাহায্য নিন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, একটি দুর্ঘটনার সাক্ষী হলে শিশুর মনে যে ক্ষত সৃষ্টি হয় তা বাস্তব। শিশুকে চাপ প্রয়োগ করে, বকাঝকা করে তাকে হুট করেই স্বাভাবিক জীবনে আনা সম্ভব নয়।

দুর্ঘটনার স্মৃতি, আতঙ্ক শিশুর ছোট্ট হৃদয়টাকে কাঁপিয়ে দেয়। বাবা মা হিসেবে সেই হৃদয়কে সময় দিন, ছায়া দিন, স্পর্শে ভরিয়ে দিন। কারণ একটি শিশুর ট্রমা কাটিয়ে ওঠার সবচেয়ে শক্তিশালী ওষুধ হল ভালোবাসা। সেই গানের মতো, “প্রতিটি শিশু ফুলেল হোক, সবার ভালোবাসায়”।

ভালোবাসা, আদর ও যত্নে ভালো থাকুক এই পৃথিবীর প্রতিটি শিশু।

ছবি- সাটারস্টক

 

The post দুর্ঘটনার পর শিশুর ট্রমা কাটিয়ে তুলতে বাবা-মা কীভাবে সাহায্য করবেন? appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/4ZalEsF
Continue reading

Sunday, July 20, 2025

চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন এর সুবিধা ও কৌশল

চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন এর সুবিধা ও কৌশল

বেশ কিছুদিন ধরেই ইউটিউব বা ইন্সটাগ্রামে ১০টা রিলস দেখলে অন্তত একটা তো চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি সম্পর্কেই থাকে! স্কিন ও হেয়ার নিয়ে নতুন যুগের নারীদের সচেতনতার এক দারুণ উদাহরণ এই পদ্ধতি, যেখানে কোনও রকমের তাপ ব্যবহার ছাড়াই চুলে দারুণ লুক পাওয়া যায়। চুল যেমন এখানে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে একইসাথে নিশ্চিন্তে করা যায় স্টাইলিং!

চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি কেন এত জনপ্রিয়?

আজকাল হিটলেস কার্লিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে ইউনিভার্সিটি ও অফিস যাওয়া নারীদের মধ্যে। যদি চুলকে সুরক্ষিত রেখে স্টাইলিং করা যায়, তাহলে কে আর এই সুযোগ হাতছাড়া করে! চলুন দেখে নিই কেনো এই হিটলেস কার্লিং এখন এতো বেশি আলোচনায় :

১) চুলের ক্ষতি রোধ: হেয়ার স্টাইলিংয়ে তাপের ব্যবহার চুলের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, যেমন – চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ভেঙে যাওয়া, আগা ফেটে যাওয়া বা চুল পড়া। হিটলেস কার্লিংয়ে তাপের ব্যবহার না হওয়ায় চুল সুরক্ষিত থাকে।

২) সহজ ও সুবিধাজনক: রাতে ঘুমানোর আগে হিটলেস পদ্ধতিতে চুল সেট করলে সকালে আলাদা করে স্টাইলিংয়ের সময় লাগে না। ব্যস্ত সকালে এটি অনেক সুবিধাজনক।

৩) কম খরচ: যেহেতু অতিরিক্ত কোনো হিটিং টুল বা বিদ্যুৎ দরকার হয় না, তাই এটি তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। কিন্তু স্টাইলিং একশো-তে একশো!

৪) বিভিন্ন স্টাইল: হিটলেস কার্লিং পদ্ধতিতে চুলে বিভিন্ন ধরনের কার্ল বা ওয়েভ তৈরি করা যায়, যেমন – টাইট কার্ল, লুজ ওয়েভ, বাউন্সি কার্ল ইত্যাদি।

হিটলেস কার্লিং কীভাবে করা হয়?

চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। চলুন জেনে নিই সহজ ও জনপ্রিয় কিছু পদ্ধতি যা আপনি নিজেই বাড়িতে চেষ্টা করতে পারেন।

১. হিটলেস কার্লিং রড বা রিবন:
  • একটি বিশেষ ধরনের ফোমের তৈরি রড বা রিবন ব্যবহার করা হয়।
  • শ্যাম্পু করা হালকা ভেজা বা শুকনো চুলে এই রডটি মাথার উপর স্থাপন করা হয়।
  • এবার চুলের ছোট ছোট অংশ রডের চারপাশে পেঁচিয়ে ক্লিপ বা রাবার ব্যান্ড দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়।

সারারাত এভাবে রেখে সকালে রড খুলে ফেললেই সুন্দর কার্ল তৈরি হয়ে যায়। এটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়।

২. ব্রেইড বা বেণিঃ

  • চুলকে হালকা ভিজিয়ে নিয়ে কয়েকটি অংশে ভাগ করে টাইট করে বেণি করে নিন।
  • যতগুলো বেণি করবেন, কার্ল তত টাইট হবে।
  • সারারাত এভাবে রেখে সকালে বেণি খুলে ফেললেই সুন্দর ঢেউ খেলানো চুল পাওয়া যাবে।
৩. রোলার :
  • চুলের ছোট ছোট অংশ রোলারের চারপাশে পেঁচিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকানো হয়।
  • কিছুক্ষণ বা সারারাত রেখে দিলে চুল কার্ল হয়ে যায়।
  • রোলারের আকার অনুযায়ী কার্লের ধরন ভিন্ন হয়।
৪. বান (খোঁপা):

  • ভেজা চুলকে উঁচু করে খোঁপা করে নিন।
  • একটি বা দুটি খোঁপা করতে পারেন।
  • যত ছোট খোঁপা হবে, কার্ল তত টাইট হবে।
  • কয়েক ঘণ্টা বা সারারাত এভাবে রেখে সকালে খোঁপা খুলে দিলেই হালকা ওয়েভ তৈরি হবে।
৫. ববি পিন বা হেয়ার ক্লিপ:
  • চুলের ছোট ছোট অংশ আঙুলে পেঁচিয়ে একটি রিং তৈরি করুন।
  • এই রিংটি ববি পিন বা ক্লিপ দিয়ে মাথার সাথে আটকে দিন।
  • সব চুল এভাবে আটকে কিছুক্ষণ রেখে দিলেই কার্ল তৈরি হবে।

হিটলেস কার্লিং এর সুবিধা:

• চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: তাপের ব্যবহার না হওয়ায় চুলের ড্যামেজ হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।

• সময় সাশ্রয়ী: রাতে চুল বেঁধে ঘুমালে সকালে উঠে দ্রুত স্টাইল করা যায়; সময় বাঁচে।

• বহনযোগ্য: যেকোনও জায়গায় সহজে স্টাইলিং করা যায়, এমনকি কোথাও ঘুরতে গেলেও!

• দামে সস্তা: মাস শেষে প্রচুর বিদ্যুৎ বিল বা প্রত্যেকবার প্রচুর প্রোডাক্ট কিনতে হচ্ছে না!

হিটলেস কার্লিং এর অসুবিধা:

ফলাফল সময়সাপেক্ষ:

হিট স্টাইলিংয়ের মতো তাৎক্ষণিক ফল পাওয়া যায় না।

ঘুমের অসুবিধা:

কিছু পদ্ধতি যেমন – রড বা রোলার লাগিয়ে ঘুমানো অস্বস্তিকর হতে পারে।

চুলের ধরন:

সব ধরনের চুলে একই রকম ফলাফল নাও আসতে পারে।

এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে খুব টাইট করে চুল পেঁচিয়ে রাখার ফলে চুলে ব্রেকেজ বা চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তারপরও সব মিলিয়ে, হিটলেস কার্লিং হল চুলের যত্ন নিয়ে স্টাইল করার একটি দারুণ উপায়। এটি চুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রেখে সুন্দর কার্ল পেতে সাহায্য করে। আপনিও যদি চুলের স্বাস্থ্য সুন্দর রেখে স্টাইলিং করতে চান হিটলেস কার্লিং একবার ট্রাই করে দেখতেই পারেন।

ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ

The post চুলে কার্ল করার হিটলেস পদ্ধতি কেন এত জনপ্রিয়? জানুন এর সুবিধা ও কৌশল appeared first on Shajgoj.



from Shajgoj https://ift.tt/vZzAKtd
Continue reading